‘জাস্ট গো’ নিয়ে সিনহার সঙ্গে যে কর্ম পরিকল্পনা ছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। শিপ্রা বলেন, ‘হ্যালো আমি শিপ্রা দেবনাথ।
গত ৩ জুলাই আমি, সিনহা, সিফাত এবং রুসকি আমরা চারজন কক্সবাজারে আসি ‘জাস্ট গো’ শিরোনামে ইউটিউব চ্যানেলে কাজ করার জন্য।
আমাদের সাথে ইতোমধ্যে বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায় যেটা আপনারা অনেকেই জানেন।
আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে এখানে এসেছিলাম জাস্ট গো নামের একটা চ্যানেল করে সেটা নিয়ে কাজ করবো।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য নিয়ে আমরা এখানে কাজ করছিলাম। আমরা যে প্রজেক্ট নিয়ে এখানে এসেছিলাম আমি ওই প্রজেক্টের ডিরেক্টর ছিলাম।
আমি বিভিন্ন ধরেনর স্ক্রিপ্ট তৈরি করছিলাম।
আপনারা জানেন, কোভিড-১৯ এর কারণে একজন প্রেজেন্টার খোঁজ করা খুব কষ্টের ছিল তাই আমি নিজেই প্রেজেন্টারের কাজ করছিলাম।
সিনহা আমাদের প্রোডিউসার ছিল কিন্তু আমরা তাকে শুধু একজন প্রোডিউসার বলতে চাই না সে ছিল আমাদের একজন সহযোগী বা সহকর্মী।
সিফাত সচরাচর ক্যামেরা চালায়, সে এখনো আমার ভিডিওটি ধারণ করছে।
শিপ্রা বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু প্ল্যান ছিল যেগুলো বেশ কিছু ঘটনার কারণে সঠিকভাবে হচ্ছে না।
যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা এখানে এসেছিলাম যার জন্য আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি, সেই স্বপ্নটা মনে হয় এখন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
অলরেডি জাস্ট গো নামে বেশ কিছু ভুয়া চ্যানেল তৈরি হয়ে গেছে।
আমরা চিন্তা করেছিলাম এই মাসের ১৫ তারিখ থেকে এই চ্যানেলে ভিডিও আপলোড দেওয়া শুরু করবো কিন্তু এখন দেখছি এই চ্যানেলটা আমাদের বাঁচানো জরুরি। যেই স্বপ্নের জন্য আমরা এত কিছু হারিয়েছি আমরা চায় এই চ্যানেলটি বাঁচুক।
আমরা বেশকিছু ভিডিও করেছি পাবলিশ করার জন্য কিন্তু সেগুলো এখনো পুরোপুরি রেডি হয়নি।
কিছু কাজ এখনো বাকি আছে। আমরা চাই এটা তাড়াতাড়ি লঞ্চ করতে।
জাস্ট গো আমাদেরই শ্রমে করা, আমরা চাই না আমাদের শ্রম নষ্ট হোক।
আমরা যে বড় বিল্ডিং তৈরি করেছি সেই বিল্ডিংয়ের সবচেয়ে শক্ত খুঁটিটি ভেঙ্গে গেছে।
আমরা চাই এই খুঁটিটি যেন একেবারে ভেঙ্গে না পড়ে। আমরা আশা করি আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।
আসলে ভিডিওটি আমরা মার্চ মাসে প্ল্যান করি। তারপর আমরা নওগাঁর আলতাদীঘিতে যাই।
সে জায়গাটা আমাদের খুব পছন্দ হয়। আলতাদীঘিতে যাবার পর আমি এক রাতেই স্ক্রিপ্ট রেডি করে ফেলি, আর ভিজুয়ালাইজেশন রেডি ছিল।
এরপর আমি সিনহাকে বলি, সিনহা তোমার ক্যামেরা চালাতে হবে। তখন সিনহা বলে, অবশ্যই চালাবো যদি তুমি শিখিয়ে দাও।
শিপ্রা বলেন, আমি ক্যামেরার সামনে থাকলেও পিছনের সব কিছু ও করতো। সিনহা অনেক বুদ্ধিমান ছিল।
সে জানতো কোন কাজ কীভাবে করতে হয়। আমরা নদীর শ্যুট করেছিলাম, পাহাড়ের শ্যুট করেছিলাম ও বনের স্যুট করেছিলাম।
তখন আমাদের টিমের সেফটির বিষয়টা ও দেখেছে কিন্তু সেই মানুষটা আজ আর নেই।
যেদিন সে মারা যায় সেদিন সে পাহাড়ের টাইম লাইভ দিচ্ছিল। সেজন্য সেদিন আমার যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
সেই ক্যামেরার পিছনে থেকে ‘চলো আর একটা করি’ এমন কথা বলা লোকটা আর নেই।
আমরা যখন নওগাঁতে আলতাদীঘির শ্যুট করেছিলাম পরে জেল থেকে এসে দেখি সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
কিন্তু এই ভিডিও আমরা পাবলিশ করিনি। কে বা কারা এটি পাবলিশ করেছে তা আমরা জানি না।
আমরা চেয়েছিলাম এটা আন্তর্জাতিকভাবে পাবলিশ করতে, যাতে বিশ্বের মানুষ আমাদের দেশের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে পারে।
আলতাদীঘিতে শ্যুট করার পর ওর কিছু কাজ ছিল আর আমাদেরও কিছু কাজ ছিল তখন ভাবলাম পাহাড় আর সমুদ্র নয় কেনো? যেহেতু সমুদ্র সৈকত এখন ফাঁকা, তাই এখনি সুযোগ এটি ভালোমতো ধারণ করার।
তখন আমরা ভাবি কোথায় শুরু করবো, কোথায় শুরু করবো। তখন ভাবলাম আমরা কক্সবাজারকেই বেজ ক্যাম্প করবো।
যেহেতু এখানে পাহাড়, নদী ও সমুদ্র একসাথে পাবো। তারপর আমরা দুইজনে প্লান করে কক্সবাজারে চলে আসি।